এই ভাইরাসের কারণে চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যাপক ভিড় এবং মানুষের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এইচএমপিভি-তে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে মালয়েশিয়া, হংকং এবং ভারতের মতো দেশে। চীনের প্রতিবেশী অন্য দেশগুলোও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
এই ভাইরাসের সংক্রমণ বা ছড়িয়ে পড়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও, বিষয়টি বিশ্বকে আবারও এক বিপদের মুখে দাঁড় করাতে পারে বলেও আশঙ্কা অনেকের। তাই প্রশ্ন উঠছে, এইচএমপিভি যদি করোনাভাইরাসের মতো বাড়ে, তাহলে তা মোকাবিলায় আমরা কতটা প্রস্তুত?
এটি কতটা গুরুতর হতে পারে?
ভারতের সি কে বিড়লা হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের কনসালটেন্ট ডা. তুষার তায়াল বলেন,
চীনে কী পরিস্থিতি চলছে, সে সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না। তবে, প্রথমত এই ভাইরাসটি নতুন নয়। ২০০১ সালে এটি চিহ্নিত করা হয়েছিল। এর উপস্থিতি আগেও ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এইচএমপিভি শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত এবং এটি ফুসফুসে প্রবেশ করে ক্ষতি করতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত হাজার হাজার ভাইরাস পৃথিবীতে আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার পর নিজেদের জীবনচক্র শেষ করে মারা যায়। আমাদের ইমিউন সিস্টেমও এই ভাইরাসগুলোকে মেরে ফেলে।
এর মধ্যে কিছু ভাইরাস অবশ্য ক্ষতি করতে পারে। তবে অধিকাংশ ভাইরাস বেশি ক্ষতি করেনা এবং সাধারণ সর্দি-কাশির মতো সমস্যা তৈরি করে চলে যায়। এসব ভাইরাসে সাধারণত ফ্লু’র মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
এইচএমপিভি সাধারণত শিশু ও বয়স্কদের আক্রান্ত করে। বেশিরভাগ মানুষ নিজেই সেরে ওঠে। যদি সমস্যা হয়, তবে সাধারণ ওষুধে এটি ভালো হয়ে যায়। বিরল ক্ষেত্রে এটি গুরুতর হতে পারে।
যদিও এ ধরনের ভাইরাল রোগের জন্য কোনো বিশেষ ওষুধ নেই। শুধুমাত্র সোয়াইন ফ্লু’র জন্য একটি ওষুধ তৈরি হয়েছিল।
করোনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে কী হবে?
এইচএমপিভি যদি কোনো কারণে করোনাভাইরাসের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, তাহলে কী হবে? এর জবাবে ডা. তুষার তায়াল জানান, করোনা পরবর্তী সময়ে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের কাছে এই ধরনের রোগ মোকাবিলার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন,
কোভিড-১৯ এর কারণে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। যদি এ ধরনের কেস সামনে আসে, তাহলে আমরা আরও ভালোভাবে এটি মোকাবিলা করতে পারব। আমাদের হাসপাতালগুলোতে এমন ব্যবস্থা রয়েছে, যার মাধ্যমে দ্রুত সমস্যা মোকাবিলা করা যাবে।
অন্যদিকে, এইচএমপিভি’র লক্ষণ খুব বিপজ্জনক নয় বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে খুব কম ক্ষেত্রে ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এইচএমপিভি নতুন ভাইরাস নয় এবং এটি করোনা মহামারির মতো পরিস্থিতি তৈরি করবে- এমন আশঙ্কাও খুব কম।

Comments
Post a Comment