Skip to main content

দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা বিডিআর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে : কমিশনপ্রধান




দেশিবিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, এটা কোনো বিদ্রোহ নয়, এটি কর্মকর্তাদের হত্যার ষড়যন্ত্র ছিল।

তদন্ত কমিশনের প্রধান আরও বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা যাঁদের সন্দেহ করি, বিশেষ করে শেখ হাসিনা, তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। আমরা ভারতীয় হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে হয় তাঁকে এক্সট্রাডাইট (প্রত্যর্পণ) করতে বলব কিংবা আমাদের দল সেখানে গিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নেব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বা সরাসরিযেটা আমাদের জন্য আইনসিদ্ধ হয়, সেটা করব। আজ সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া কমপ্লেক্সের অ্যাংকর হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ফজলুর রহমান কথাগুলো বলেন। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (রাওয়া) প্রতিনিধি, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের স্বজন, জীবিত ফিরে আসা কর্মকর্তা এবং তখন সেনাবাহিনীতে কর্মরত ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময়ের শুরুতে কথা বলেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা। বিডিআর হত্যাকাণ্ডে নিহত হন বাহিনীটির মহাপরিচালক ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) শাকিল আহমেদ। তাঁর ছেলে রাকীন আহমেদ বক্তৃতায় তদন্ত কমিশনের এক সদস্যের আদর্শিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

নিহত কর্নেল (অব.) কুদরত এলাহী রহমান শফিকের ছেলে সাকিব রহমান বলেন, বিডিআরের অনেক নির্দোষ সদস্য অন্যায়ভাবে সাজা খাটছেন। কিন্তু সবাই যে নির্দোষ তা নয়। আমি সত্যিকার অর্থে যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচার চাই।

কমিশন যেন কোনো আবেগ-অনুভূতির বশবর্তী না হয়ে সত্যটা তুলে ধরে, সেটা চান নিহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফর রহমান খানের কন‍্যা ফাবলিহা বুশরা। তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ড কেবল জাতীয় কোনো বিষয় নয়। এটি আন্তর্জাতিক বিষয়। এটি আমাদের সীমান্ত ছাড়িয়ে গেছে।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে নিহত মেজর তানভীরের মরদেহ এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি বলে উল্লেখ করেন তাঁর স্ত্রী তাসনুভা মাহবুব। তিনি বলেন, এটা আমার কাছে এখনো রহস্য তাঁর (মেজর তানভীর) মরদেহ কেন বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আমি এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর আমার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১৬ বছর ধরে আমি যখন কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছি, তখন তাদের বলা হয়েছে আমাকে রাখলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমরা বিচার চাই, স্বাভাবিক জীবন চাই, সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই।

স্বজনদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন নিহত মেজর মমিনের সহধর্মিণী সানজানা সোনিয়া, নিহত লে. কর্নেল কাজী রবি রহমানের ছোট ভাই কাজী অলি রহমান প্রমুখ।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় পিলখানা থেকে বেঁচে ফেরা কর্মকর্তা মেজর (অব.) মোহাম্মদ জায়েদি আহসান হাবিব বলেন, পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের পর গণমাধ্যমে লাইভ বক্তব্য দিলে সবচেয়ে উঁচু মহল থেকে ফোন করা হয়। বলা হয়, লাইভ এভাবে লাইভ বক্তব্য দেওয়া যাবে না। এরপর আর কেউ লাইভ বক্তব্য দেয়নি। এরপর যত বক্তব্য বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা দিয়েছেন, সবই ছিল গাইডেড (নির্দেশিত)

তদন্ত কমিশনের প্রধান যা বললেন

তদন্ত কমিশনের প্রধান ফজলুর রহমান বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রতিটি শহীদ পরিবারের কাছে আমাদের সহযোগিতার আবেদন থাকবে। ঘটনায় যেসব কর্মকর্তা বেঁচে ফিরেছেন, নিগৃহীত হয়েছেন, চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গেও আমরা বসব, কথা বলব। ঘটনার ১৫ বছরের মাথায় এই কমিশন গঠন করা হলো। ইতিমধ্যে অনেক প্রমাণ নষ্ট হয়ে গেছে। তবু আমরা কোনো জিনিস গোপন রেখে কিছু করতে চাই না। যা হবে, খোলাখুলি হবে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে সব বিষয় আমরা জাতিকে জানাব।

 


Comments

Popular posts from this blog

এক্ষুনি কাজি ডাকেন, আজই ওদের বিয়ে দেব..

  ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসের ঘটনা। সেই সময় মহাখালী ডিওএইচএসের ৩১ নম্বর রোডে থাকতেন ওমর সানী আর মৌসুমী থাকতেন ৩২ নম্বর রোডে। তখন তুমুল গুঞ্জন উঠেছিল ওমর সানী ও মৌসুমীর প্রেম-বিয়ে নিয়ে। কিন্তু তখনো তাঁরা বিয়ে করেননি। তবে দুই পরিবারের সদস্যরা এ গুঞ্জন সম্পর্কে জানতেন। তখন বিয়ে নিয়ে আগ্রহী হয়ে এগিয়ে এলেন মৌসুমীর নানি ও ওমর সানীর মা। সে ঘটনাও ছিল বেশ মজার। মৌসুমীর শুটিংয়ে মাঝেমধ্যে তাঁর নানি আসতেন। এভাবেই ওমর সানীর মায়ের সঙ্গে মৌসুমীর নানির পরিচয়। এ পরিচয় থেকেই ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই দুই নায়ক–নায়িকার মা ও নানির মধ্যে নানা বিষয়ে কথা হতো। তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো ছিল। তাঁরা ছেলে ও নাতনির প্রেমের গুঞ্জন শুনে সম্পর্ক জোড়া দিতে এগিয়ে আসেন। তত দিনে ওমর সানীর মা মৌসুমীকে ভীষণ পছন্দ করে ফেলেছেন। অন্যদিকে মৌসুমীর কাছে ওমর সানীর প্রশংসা করতেন তাঁর নানি। এভাবে দুই তারকার মধ্যে প্রেমটা আরও বেড়ে যায়। ওমর সানী ও মৌসুমী ছবি: ফেসবুক এদিকে মৌসুমীর মা কখনোই চাইতেন না সিনেমার কেউ তাঁর মেয়েকে বিয়ে করুক। তিনিও একসময় রাজি হন। কারণ, মৌসুমীর নানিই ছিলেন দুই পরিবারের মূল মধ্যস্থতাকারী। তাঁকে পছন্দ করতেন সবা...

আগুন দেওয়া হয়েছে ৩২ নম্বরে, নেওয়া হয়েছে ক্রেন

  ভাঙচুরের এক পর্যায়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির তৃতীয় তলায় আগুন দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে সেখানে আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে চলছে ভাঙচুর। রাত ১১টার সময়ও সেখানে আগুন জ্বলছে। ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য রাত পৌনে ১১টার দিকে সেখানে বড় একটি ক্রেন আনা হয়েছে। পরে সেখানে আরেকটি এক্সকাভেটর নেওয়া হয়েছে। ৩২ নম্বরের এই বাড়ির পাশের একটি ভবনের এক পাশেও আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছে এই ক্রেন। আজ বুধবার রাতে ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং ৩২ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলা ও দোতালায় অনেক মানুষ রয়েছেন। বাড়িটির দেয়াল ভাঙছেন কেউ কেউ। অনেকে হাতুড়ি বা লাঠি দিয়ে বাড়িটির সীমানাদেয়াল ভাঙছেন। কিছু মানুষকে জানালার গ্রিল, কাঠ এসব নিয়ে যেতে দেখা গেছে। অনেক মানুষ বাড়িটির সামনে আসছেন, কিছুক্ষণ দেখে, ছবি তুলে ও ভিডিও করে কেউ কেউ চলে যাচ্ছেন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ ও ভাঙচুর করা হয়েছে ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ রাত ১১টার সময়ও বাড়িটির সামনে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী অবস্থান করছেন। তাঁরা স্বৈরাচারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন...