দেশি–বিদেশি
ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে
পিলখানায় হত্যাযজ্ঞ
চালিয়েছিল বলে
মন্তব্য করেছেন
বিডিআর (বর্তমান
বিজিবি) হত্যাকাণ্ডের
ঘটনায় গঠিত
জাতীয় স্বাধীন
তদন্ত কমিশনের
প্রধান মেজর
জেনারেল (অব.)
আ ল
ম ফজলুর
রহমান। তিনি
বলেন, এটা
কোনো বিদ্রোহ
নয়, এটি
কর্মকর্তাদের হত্যার
ষড়যন্ত্র ছিল।
তদন্ত কমিশনের
প্রধান আরও
বলেন, ‘বিডিআর
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়
আমরা যাঁদের
সন্দেহ করি,
বিশেষ করে
শেখ হাসিনা,
তিনি ভারতে
অবস্থান করছেন।
আমরা ভারতীয়
হাইকমিশনের সঙ্গে
যোগাযোগ করে
হয় তাঁকে
এক্সট্রাডাইট (প্রত্যর্পণ)
করতে বলব
কিংবা আমাদের
দল সেখানে
গিয়ে তাঁর
সাক্ষাৎকার নেব।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
মাধ্যমে বা
সরাসরি—যেটা আমাদের জন্য
আইনসিদ্ধ হয়,
সেটা করব।’
মতবিনিময়ের শুরুতে কথা বলেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা। বিডিআর হত্যাকাণ্ডে নিহত হন বাহিনীটির মহাপরিচালক ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) শাকিল আহমেদ। তাঁর ছেলে রাকীন আহমেদ বক্তৃতায় তদন্ত কমিশনের এক সদস্যের আদর্শিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
নিহত কর্নেল (অব.) কুদরত এলাহী রহমান শফিকের ছেলে সাকিব রহমান বলেন, ‘বিডিআরের অনেক নির্দোষ সদস্য অন্যায়ভাবে সাজা খাটছেন। কিন্তু সবাই যে নির্দোষ তা নয়। আমি সত্যিকার অর্থে যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচার চাই।’
কমিশন যেন কোনো আবেগ-অনুভূতির বশবর্তী না হয়ে সত্যটা তুলে ধরে, সেটা চান নিহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফর রহমান খানের কন্যা ফাবলিহা বুশরা। তিনি বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ড কেবল জাতীয় কোনো বিষয় নয়। এটি আন্তর্জাতিক বিষয়। এটি আমাদের সীমান্ত ছাড়িয়ে গেছে।’
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে নিহত মেজর তানভীরের মরদেহ এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়নি বলে উল্লেখ করেন তাঁর স্ত্রী তাসনুভা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘এটা আমার কাছে এখনো রহস্য তাঁর (মেজর তানভীর) মরদেহ কেন বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আমি এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর আমার ছেলেকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৬ বছর ধরে আমি যখন কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছি, তখন তাদের বলা হয়েছে আমাকে রাখলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমরা বিচার চাই, স্বাভাবিক জীবন চাই, সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই।’
স্বজনদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন নিহত মেজর মমিনের সহধর্মিণী সানজানা সোনিয়া, নিহত লে. কর্নেল কাজী রবি রহমানের ছোট ভাই কাজী অলি রহমান প্রমুখ।
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সময় পিলখানা থেকে বেঁচে ফেরা কর্মকর্তা মেজর (অব.) মোহাম্মদ জায়েদি আহসান হাবিব বলেন, পিলখানায় হত্যাকাণ্ডের পর গণমাধ্যমে লাইভ বক্তব্য দিলে সবচেয়ে উঁচু মহল থেকে ফোন করা হয়। বলা হয়, লাইভ এভাবে লাইভ বক্তব্য দেওয়া যাবে না। এরপর আর কেউ লাইভ বক্তব্য দেয়নি। এরপর যত বক্তব্য বেঁচে ফেরা কর্মকর্তারা দিয়েছেন, সবই ছিল গাইডেড (নির্দেশিত)।
তদন্ত কমিশনের প্রধান যা বললেন
তদন্ত কমিশনের প্রধান ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রতিটি শহীদ পরিবারের কাছে আমাদের সহযোগিতার আবেদন থাকবে। এ ঘটনায় যেসব কর্মকর্তা বেঁচে ফিরেছেন, নিগৃহীত হয়েছেন, চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গেও আমরা বসব, কথা বলব। ঘটনার ১৫ বছরের মাথায় এই কমিশন গঠন করা হলো। ইতিমধ্যে অনেক প্রমাণ নষ্ট হয়ে গেছে। তবু আমরা কোনো জিনিস গোপন রেখে কিছু করতে চাই না। যা হবে, খোলাখুলি হবে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে সব বিষয় আমরা জাতিকে জানাব।’

Comments
Post a Comment